- শুভ জন্মদিন বৎস! আশীর্বাদ করি আরো ৯০ বছর বাঁচো।
- ৯০ বছর!!! নাআআআআআ! :( :( :(
- ১০০ বছর বাঁচতে আপত্তি কেন? আমার তো মনে হয় হাজার বছর হলেও বোধহয় কম হবে। :)
- সেরকম বনলতা সেন পেলে বাঁচতে পারি বই কি! :) কিন্তু বুড়ো হয়ে চামড়া ঝুলে গেলে বনলতা যদি আমায় ছেড়ে যায়... তাহলে খুব দুঃখ পাব! :(
একটা কথা আছে না ‘বিধাতা অলক্ষ্যে মুচকি হাসলেন’, সেদিনও সেরকম কিছু একটা হয়েছিল নিশ্চয়। আজ তাই আর আপত্তি নেই হাজার বছর বাঁচতে। বিদিশার নিশা কিরকম ভুলে গেছি। শুধু বুঝি ছোট চুলে অনেক সুন্দর। হয়তো সেটা দেখেই অভ্যস্ত বলে। কয়েকটা আবার এতই বেয়াড়া মাঝে মধ্যেই বিনা অনুমতিতে সামনে এসে যায়। ‘ফাটাফাটি’র বেশি কোনো বিশেষণ তখন আর মনে আসে না! শ্রাবস্তীর কারুকার্যও দেখা হয়নি। তাই অত নিশ্চিত হয়ে বলতে পারি না সেই কারুকার্য এত জীবন্ত এত প্রাণোচ্ছল কিনা। ওই কারুকার্য কি মোনালিসার মত মাল্টিপারপাস হাসি হাসতে পারে? নাকি পারে হঠাৎ হঠাৎ অন্যমনস্ক হয়ে অনেক দূরে কোথাও হারিয়ে যেতে? তখন মনে হয় ‘নাহ্! বনলতা সেন একটা কথার কথা। ঠিক ওরকমের থেকে অনেক আলাদা অনেক মনের মতন কেউ আছে আমার সঙ্গে।’ তবু এক জায়গায় এসে খুঁজে পাই বনলতা সেনকে। যখন-
সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতন
সন্ধ্যা আসে; ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল;
পৃথিবীর সব রঙ নিভে গেলে পাণ্ডুলিপি করে আয়োজন
তখন গল্পের তরে জোনাকির রঙে ঝিলমিল;
সব পাখি ঘরে আসে- সব নদী- ফুরায় এ-জীবনের সব লেনদেন;
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার বনলতা সেন।
অনেক ছোট ছোট ভেস্তে যাওয়া প্ল্যান, নানারকমের পাগলামি, খামখেয়ালিপনা, সামান্য কিছু কথা- কিছু তার ভুল করে বলে ফেলা, বাকি কিছু হয়ত বা তাৎপর্যপূর্ণ, একটা চৌকো ইঁটের লাল দেওয়াল, একটা ফাঁকা রাস্তা, একটা অল্প ভিড়ে ভর্তি মেট্রো স্টেশন, একটা পুতুলের শো-কেস, কয়েকটা কাগজ, বাসের পেছনদিকের একটা ঘষে যাওয়া কাচ, সেটার মধ্যে দিয়ে ঝাপসা চোখে তাকানো, একটা ট্রেনের চলে যাওয়া, একটা বাসের দূরে রাস্তার বাঁকে হারিয়ে যাওয়া, একটা জানলার ধারে বৃষ্টির ছাট, একটা স্টেশনে হঠাৎ আঁকড়ে ধরতে চাওয়া, অনেকগুলো ছবি- সাদাকালো এবং রঙিন, কয়েক টুকরো কাগজ- তার কোনোটা গল্প, কোনোটা কবিতা, কোনোটা বা বাসের টিকিট, বলা না-বলা অনেক কথা, এক সঙ্গে আসা অনেকটা পথ, যেটুকু আসতে পারিনি তার জন্যে হাহাকার আর আসতে বাকি যেটুকু তার জন্যে আগাম উচ্ছ্বাস, সুরেলা গলায় শুনতে চাওয়া বন্দিশ কিংবা ডেনভারের ‘Annie’s Song’ বা বেসুরো গলায় গাইতে চাওয়া ‘ঘুমভাঙানিয়া’ কিংবা ‘I’ll walk in the rain by your side/ I’ll cling to the warmth of your hand’ - সব মিলিয়ে চলে গেল আরেক জন্মদিন। শুরু হল নস্টালজিয়ার আরেক চ্যাপ্টার। রইল অনেক আশা, ভালোবাসা- দেওয়ার এবং পাওয়ার।